বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ ও অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
আপলোড সময় :
১৭-০২-২০২৪ ১১:০২:০৪ পূর্বাহ্ন
আপডেট সময় :
১৭-০২-২০২৪ ১১:১০:৩৮ পূর্বাহ্ন
সংগৃহীত
বিশ্বজুড়ে অস্ত্র ও যুদ্ধের পেছনে অর্থ ব্যয় না করে, জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) জার্মানির মিউনিখে নিরাপত্তা সম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানান।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় এ সময় ৬টি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। এই পর্বে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে অতিথি হিসেবে ছিলেন মার্কিন জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি। এছাড়া মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্ট্যনি ব্লিংকেনসহ অনেক বিশ্বনেতারাও উপস্থিত ছিলেন সেখানে।
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে বাংলাদেশ ভয়াবহ হুমকির মুখে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন এই সমস্যা এককভাবে সমাধান সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন উন্নত বিশ্বের সদিচ্ছা। এজন্য ৬ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী তার প্রথম প্রস্তাবে বলেন, আমাদের সঠিক পথে রাখতে জলবায়ু অর্থায়নের বরাদ্দ ছাড় করার সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। তিনি বলেন, উন্নত দেশগুলোকে পরিকল্পনার ভিত্তিতে ২০২৫ সাল পর্যন্ত দুই বছরে প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদানের প্রতিশ্রুতি মেনে চলতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, এই বছরের শেষ নাগাদ আমাদের সবাইকে অবশ্যই বৈজ্ঞানিক প্রমাণের ভিত্তিতে বিশেষ করে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ওপরে ২০২৫ পরবর্তী একটি নতুন জলবায়ু অর্থায়ন লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে একমত হতে হবে।
দ্বিতীয় প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বকে যুদ্ধ ও সংঘাত, অবৈধ দখলদারিত্ব এবং নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের বিশেষ করে নারী ও শিশুদের নির্মম হত্যাকাণ্ড থেকে পরিত্রাণ পেতে হবে, যা গাজা ও অন্যত্র বিশ্ববাসী প্রত্যক্ষ করছে। তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার প্রভাব সংঘাতের অনুভূতির বোধ থেকেও অনেক দূরে অনুভূত হয়।
তৃতীয় প্রস্তাবনায় তিনি বলেন, জলবায়ু প্রভাব প্রশমন ও অভিযোজনের জন্য অর্থায়নের তীব্র ভারসাম্যহীনতা দূর করার জন্য অভিযোজন অর্থায়নের বর্তমান পর্যায় অন্তত দ্বিগুণ করা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে অভিযোজনে সহায়তার জন্য বাংলাদেশকে ১ বিলিয়ন ইউরো প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার জন্য তিনি ফরাসি প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান।
চতুর্থ প্রস্তাবনায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদ্যমান আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিল থেকে উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থ প্রাপ্তি সুগম করার জন্য দীর্ঘকালের অমীমাংসিত সমস্যাটি তাদের সক্ষমতায় বিনিয়োগ করার সুযোগসহ সমাধান করতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড থেকে অর্থায়ন পাওয়ার জন্য আমাদের শুধু দুটি যোগ্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে এবং আরও দুটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
পঞ্চম প্রস্তাবনায় শেখ হাসিনা বলেন, বৈশ্বিক অর্থায়নের ব্যবস্থাপনায় সংস্কারের ক্ষেত্রে বিশেষ করে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর ঋণের বোঝা দূর করতে তাদের জন্য অনুদান ও সুবিধাজনক ঋণ লাভের সুযোগ বাড়ানোর মাধ্যমে অর্থপূর্ণ ফলাফল দেখাতে হবে।
সবশেষ প্রস্তাবনায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু কর্মসূচি জন্য বেসরকারি পুঁজি প্রবাহের জন্য সরকারগুলোকে সঠিক পরিকল্পনা, নীতি ও ব্যবস্থার ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে হবে। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রকল্পগুলোর জন্য বেসরকারি পুঁজি আকৃষ্ট করার জন্য উদ্ভাবনী, মিশ্র অর্থায়নের ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ ছাড়া জলবায়ু অর্থায়নের বিপুল পরিমাণ ঘাটতির কার্যকর সমাধান করা যাবে না বলেও এ সময় সুস্পষ্ট মন্তব্য করেন তিনি।
এরআগে, মিউনিখ সিকিউরিটি সামিটের উদ্বোধনী ভাষণে জাতিসংঘ মহাসচিব এন্টনিও গুতেরেস বৈশ্বিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বলেন স্নায়ুযুদ্ধের চেয়েও খারাপ সময় পার করছে বিশ্ববাসী, এখন পুরো পৃথিবীই বিভক্ত, যা মোটেই কাম্য নয়।
মার্কিন দূত জন কেরি দাবি করেন, দুবাই সম্মেলনের ধারাবাহিকতায় জলবায়ু পরিবর্তন রোধে ইতিবাচক দিকেই ধাবিত হচ্ছে বিশ্ব।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Monir Hossain
কমেন্ট বক্স